পরীক্ষায়
দুর্নীতি প্রতিরোধে ছাত্রসমাজের ভূমিকা
ভূমিকা: ছাএজীবন
ভবিষ্যত জীবন গঠনের প্রস্তুতিকাল। এ সময় নিজেকে যেভাবে যতটুকু গঠন করা যাবে, কর্মজীবনে
সে রকমই ফললাভ হবে। তাই ছাএজীবন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু বর্তমানে ছাএজীবন নানা
সমস্যায় আক্রান্ত। এর মধ্যে অন্যতম হলো পরীক্ষায় দুর্নীতির আশ্রয় গ্রহণ।
দূর্ণীতির
স্বরূপ: আমাদের দেশের শিক্ষাব্যবস্থা দুর্নীতিমুক্ত নয়। সর্বপর্যায়ে নানা রকমের দুর্নীতি
পরীক্ষা ব্যবস্থাকে কলুষিত করছে। পরীক্ষা পদ্ধতিতে দুর্নীতি প্রবেশ করায় এর ওপর অনাস্থা
প্রকাশ করছে। তাই পরীক্ষার মাধ্যমে অর্জিত মানের ওপর এখন কেউ নির্ভর করে না। তাই নতুনভাবে
ভর্তি বা চাকরির পরীক্ষা নেয়ার প্রবণতা দেখা দিয়েছে। পরীক্ষার হলে গণটোকাটুকির প্রবণতা
একটি মারাত্মক দুর্নীতি। বিশেষত মফস্বল অঞ্ছলে পরীক্ষায় নকল করার সুযোগ নেয়া হয় বা
দেয়া হয়। পরীক্ষা চলাকালে পরিদর্শকগণ ভয়ে অথবা ঝামেলা এড়াতে নকল রোধ করার চেষ্টা করেন
না। বিভিন্ন পদ্ধতে নকল করা হয়। যেমন অসুস্থতা দেখিয়ে পৃথব কক্ষে পরীক্ষা দিয়ে নকল
করা, উওরপত্রে বাইরে থেকে সরবরাহ করা, প্রশ্নপত্র ফাঁস ইত্যাদি। প্রশ্ন তৈরি করা থেকে
পরীক্ষার হলে যাওয়া পর্যন্ত দীর্ঘ সময় এ দুর্নীতি নানাভাবে ঘটতে পারে। এমনকি পরীক্ষার পরেও খাতা মূল্যায়নের সময় নানা দুর্নীতি
ঘটে থাকে।
জাতীয় জীবনে
পরীক্ষায় দুর্নীতি প্রভাব: স্বাধীনতা-উওর বাংলাধদশে নকল বা পরীক্ষায় দুর্নীতির প্রভাব
বিশেষভাবে লক্ষণীয়। এ অবস্থা বিরাজমান থাকলে জাতি হিসেবে যে আমরা ধ্বংসের অতল গহবরে
তলিয়ে যাব তা বলাই বাহুল্য। তাই পরীক্ষায় দুর্নীতির রাহুগ্রাস হতে আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থাকে
বাঁচাতে হবে।
পরীক্ষায়
দুর্নীতির কারন: আমাদের দেশে পরীক্ষায় দুর্নীতির
বীজ একদিনে বপিত হয়নি। এর পেছনে অনেক কারন
রয়েছে। সেগুলো নিচে তুলে ধরা হলো:
১. ছাত্রদের
পড়ালেখা প্রতি অবহেলা: ছাত্রদের প্রধান তপস্যা হলো অধ্যয়ন। কিন্তু বর্তমানে পড়ালেখা
প্রতি ছাত্রদের চরম উদাসীনতা ও অবহেলা লক্ষ করা যায়। তারা মনোযোগ দিয়ে লেখাপড়া করে
না। ফলে পরীক্ষায় সহজে পাসের চিন্তায় নকলের আশ্রয় গ্রহণ করে।
২. অভিভাবকদের
ঔদাসীন্য: বর্তমান যুগ ব্যস্ততার যুগ। তাই প্রায়ই দেখা যায়, অভিবাভকরা তাদের ছেলেমেয়েদের
শিক্ষার উপকরণ এবং বেতন যুগিয়ে দিয়েই আপন কর্তব্যের সমাপ্তি ঠিকমত ঘটান। সন্তান ঠিকমত
লেখাপড়া করে কিনা তা একবারও লক্ষ করেন না। আবার কোনো কোনো অভিভাবক গৃহশিক্ষক রেখে দিয়েই
সন্তানের পড়ালেখার খোঁজখবর রাখার দায়িত্ব যথেষ্ট পালিত হয়েছে বলে মনে করেন। ফলে সন্তানের
পড়ালেখার অধঃপতন ঘটতে থাকে। অবশেষে কোনো উপায়ান্তর না দেখে তারা পরীক্ষায় দুর্নীতির
আশ্রয় গ্রহণ করে।
৩. শিক্ষা
প্রতিষ্টান ও গৃহের প্রতিকূল পরিবেশ: শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষার অনুকূল পরিবেশের
অনুপস্থিতি পরীক্ষায় দূনীতির অন্যতম কারন। প্রতি ক্লাসে ছাত্রের সংখ্যা এতো বেশি যে,
সকল ছাত্রের প্রতি সমভাবে মনোযোগ দেয়া শিক্ষকের পক্ষে সম্ভব হয় না। ফলে ছাত্র-ছাত্রীরা
নিজেদের অসুবিধাগুলো শিক্ষকের কাছে খুলে বলতে পারে না।
৪. ত্রূটিপূর্ণ
শিক্ষা পদ্ধতি: বাংলাদেশের চলমান শিক্ষা পদ্ধতি যথোপযুক্ত নয়। সিলেবাস প্রণয়ন, পাঠ্যপুস্তকে
নিম্ন মানের বিষয় আলোচনা ইত্যাদি নানা ধরনের ভুলত্রূটি রয়েছে। তা ছাড়া ছাত্রদের প্রতি
শিক্ষকদের যে বিশেষ নজর প্রয়োজন, তার যথেষ্ট অভাব রয়েছে। ফলে ছাত্ররা পরীক্ষার সময়
মুখস্ত করা, নকল করা ত্রসবের আশ্রয় নেয়।
৫. কুসঙ্গের
প্রভাব: অভিভাবকদের অসচেতনতার ফলে অনেক সময় শিক্ষার্থীরা খারাপ ছেলেদের সাথে মিশে পড়াশোনার
প্রতি কআগ্রহ হারিয়ে ফেলে। কেউ কেউ নানা মাদকদ্রব্যও আসক্ত হয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে পড়াশোনার
থেকে দূরে সরে আসে।
প্রতিকারের
উপায়: পরীক্ষায় দুর্নীতির ক্ষতিকর প্রভাব হতে দেশকে রক্ষা করতে হরৈ নিচের তকব্যবস্থাগুলো
গ্রহন করতে হবে-
১.পরীক্ষা-পদ্ধত্তির
পরিবর্তন: রচনামূলক এবং নৈবিক্তিক প্রশ্নপত্র এমনভাবে তৈরি করতে হবে, যাতে পরীক্ষার্থীরা
মেধা ও মননের যথাযধ মূল্যায়ন হয়।
২. অভিভাবকদের
সচেতনতা বৃ্িদ্ধ: অভিভাবকদের সন্তানের প্রতি অধিক সচেতন হতে হবে এবং পড়ালেখার খোঁজ
নিতে হবে। নিজ সন্তানদের ও তার বন্ধুবান্ধবদের
প্রতি নজর দিতে হবে।
৩. শিক্ষকদের
সচেতনতা বৃদ্ধি: অনেক শিক্ষক বিদ্যালয়ে কর্তব্যের প্রতি অধিক সচেতন, কিন্তু প্রাইভেট
ভালো পড়ান। তাদের প্রাইভেট ছাত্র পরীক্ষার হলে দুর্নীতি করলে শিক্ষক দেখেও না ওদখঅর
ভান করেন। শিক্ষকদের েএ মানসিকতার পরিবর্তন করতে হবে।
উপসংহার: পরীক্ষার দুর্নীতি প্রতিরোধ কেরতে হলৈ ছাত্র, শিক্ষক ও অভিভাবকদের মহল সকলকেই এগিয়ে আসতে হবে। পরীক্ষায় নকল নামক দুর্নীতির ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে ছাত্র ও অভিভাবকদের সচেতন করতে হবে। তা হলে তার দুর্নীতি থেকে দূরে থাকবে।
Post a Comment
Pllease wait a moment